উসমান গাজী এ শহরটি বিজয় করতে দীর্ঘ ৯ বছর অবরোধ করে রাখেন। অনেক বড় শহর হওয়ায় এটা বিজয় করা তেমন সহজ ছিলোনা। কিন্তুু উসমান গাজীর রাজনৈতিক পারদর্শীতা এবং সঠিক নেতৃত্বের কারনে মৃত্যুর আগে এ শহর বিজয় করেন । উসমান গাজী অবরোধের সময় শহরের বাইজেন্টাইনদের গৃহযুদ্ধের সুযোগ নিয়েছিলেন।
সম্রাট ২য় অ্যান্ড্রোনিকোস সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো যে, তাঁর দাদা ইতিমধ্যে বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছে এবং উসমানের অবরোধ থেকে শহরকে রক্ষা করতে পারবেনা তাই সিংহাসনের দখল নিতে গিয়ে তারা পরস্পরের সাথে লড়াই শুরু করে দিয়েছিলো। সে খুব জেদী ছিলো এবং অবিরাম ঝামেলা সৃষ্টি করেছিলো। সে তৎকালীন বাইজেনটাইন দের সবচেয়ে সাহসী ও শক্তিশালী সোনপতি,,, সেনাপতি সারোজ ও তার আপন ছোট ভাই সেনাপতি সার্বোদ কে ও নিজ পক্ষে টেনে নিয়ে সিংহাসন লড়াইয়ে বিজয় লাভ করে সিংহাসনে বসে।
এসব কিছু হয়েছিলো উসমানের শহর অবরোধ এর পরে, সে সময় উসমান গাজীর প্রায় ১০ হাজার সৈন্য শহর অবরোধ করে রেখেছিলো। শহর অবরোধের পর সিংহাসন নিয়ে এ ঝামেলা ও লড়াই উসমান গাজীকে সুযোগ করে দিয়েছিলো অনেক কিছুর । এ সুযোগে উসমান অনেক রাজনৈতিক খেলা খেললেন,,, যার ফলে শহরের লোকজন উসমানের পক্ষে আস্তে শুরু করলো । এ অবরোধের সময় বুরসার বাহিনীর সাথে উসমানের ছোট ছোট অনেক যুদ্ধ হয়েছিলো।
চারদিক থেকে রসদ আসা বন্ধ করে দিয়ে ছিলো উসমান গাজী। শহর রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা বাহিনীকে থামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি । শহরের মধ্যে থাকা লুকায়িত ফটকটি ও খুজে বের করা হয়। সেনাপতি আইদোগদু এবং সেনাপতি কনুর মাত্র অল্প কিছু সেনা নিয়ে সে ফটক দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলে ও তখন অনেক দেরি হয়ে যাই, কারন ভিতরে থাকা সৈন্য রা বুজতে পেরে সাথে সাথে ফটকটি গুড়িয়ে দেন।
ভিতরে মাত্র অল্প কিছু সৈন্য নিয়ে সেনাপতি আইদোগদু ও সেনাপতি কনুর বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে, সেনাপতি কনুর পালিয়ে আসতে পারলে ও সেনাপতি আইদোগদু শহীদ হন। বাইজেনটাইন সেনাপতি সারোজ আইদোগদুর মাথা বুরসার ফটকের উপর ঝুলিয়ে দেন, তখন উসমান রাগে ক্ষোভে সারোজের মাথা কেটে বুরসার ফটকে ঝুলানোর শপথ গ্রহন করেন । এসময় উসমানের হাত থেকে শহরকে বাঁচানোর জন্য গ্রীকদের সাথে ও জোট করেছিলো অ্যান্ড্রোনিকোস।
এসময় অবরোধের শেষ পর্যায়ে এসে সারাজীবণ জীহাদের ময়দানে ছুটে চলা উসমান গাজী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন উসমানের ছেলে উরহান গাজী । সে সময় অনেক কঠিন অবস্থা বীরত্বের সাথে মোকাবেলা করেন উরহান ।
অনাহার এবং অবরোধ সহ্য করতে না পেরে বুরসার সৈন্যরা শেষ আক্রমণের জন্য ময়দানে অবতীর্ণ হন। অসুস্থ শরীর নিয়ে উসমান গাজী যুদ্ধের ময়দানে বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে গেলেও একসময় বিছানায় শুয়ে পড়তে হয়। কিন্তু তার সেনাপতিরা তার দেখানো পথে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে শহর বিজয় করে নেন ।
সেনাপতি সারোজ কে হত্যা করে তার মাথা ঝুলিয়ে দেন উসমান গাজী। এবং তার ছোট ভাই সার্বোদকে হত্যা করেন উরহান গাজী । এসময় সার্বোদ শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রেখেছিলেন, কিন্তু উরহান তাকে পরাজিত করেছিলেন ।
যুদ্ধে আনদরোনিকোস কে উসমান গাজী বন্দী করেন, কিন্তু তাকে উসমান গাজী হত্যা করেননি। কেউ কেউ বলেন তাকে উসমান গাজী ছেড়ে দিয়েছিলেন সাথে সাথে । এ যুদ্ধে বুরসার সেনাবাহিনী ছিলো মোট ৪০ হাজার । আর উসমান গাজীর বাহিনী ছিলো ১২ হাজার । এ যুদ্ধে উসমান গাজীর নেতৃত্ব বীরত্বের সাথে বিভিন্ন জায়গায় সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
- উরহান গাজী
- তুরগুত আল্প
- কনুর আল্প
- আকচাকোচা আল্প
- আইদোগদু আল্প
- মিহাইল কোসেস
বুরসা শহর বিজয়ের ৭ দিন পর উসমান গাজী, সুলতান প্রথম উসমান মৃত্যু বরন করেন ।