জানিনা কোথা থেকে শুরু করব, কিভাবে লিখব কারণ আমি বাউল মানুষ আমি গুছিয়ে লিখতে বা কথা বলতে কোন কিছুই পারি না। তারপরেও আজ মনে হচ্ছে ছন্নছাড়া অনুভূতিগুলো পুরোপুরি শেষ করে দিতে। কিন্তু যা নিজে অনুভূতি কখনো সবটুকু শেষ হয় না। কিছু না কিছুই রয়ে যায় । আজ প্রায় অনেকদিন হলো রাতে ঠিকমত ঘুম হয় না। তাই চোখের নিচে কালো ছাপ পড়ে গিয়েছে।মনে হচ্ছে নিজেকে নিজেই ঠকাচ্ছি। নিজের প্রতিবিম্বকেও ঠকাচ্ছি শুধুমাত্র ছোট্ট একটা অনুভূতির জন্য। তবে আর নয়!”” এবার নিজের জন্য বাঁচব, নিজেকে অনুভব করব। অনেক হয়েছে!!!!!এসব অনুভূতির জন্য মন খারাপের কাটাকুটি খেলা এবার না হয় কোনো ভনিতা ছাড়াই নিজেকে একটু নিজের মতো করে ভালোবাসা উচিত।
পরিচয় হিয়া চৌধুরী। এবার সদ্য ইউনিভার্সিটিতে উঠেছি। অতীত দুই বছর আগে হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করতে করতে একজনকে দেখি সাদা পাঞ্জাবি পড়ে আছেন। চোখে মুখে রাগ! মনে হচ্ছে কাউকে গিলে খাবে। তারপর হঠাৎ তার প্রতি আগ্রহ দিন দিন বাড়তে থাকে। ফলো করতাম সব সময়। এরপর ভালোলাগা থেকে হঠাৎ ভালোবাসাতে পরিণত হলো। তবে, সেটা একতরফা। তার সাথে বাস্তবে জীবনেও দেখা হয়নি। ইচ্ছে ছিল সামনে থেকে বাস্তবে সরাসরি দেখার। কিন্তু সেই ইচ্ছেটা এখন আর কাজ করে না। হঠাৎ অনেক তপস্যার পর ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের জন্য কথা হয়েছিল। তখন বলিনি তাকে আমার ছোট্ট মনের বিশাল ভাবে জমে থাকা তাকে নিয়ে কথাগুলো কারণ যেখানে যেই কথার মূল্য নেই সেখানে সেই কথা বলা অনুচিত।। আর যেখানে তার মনে অন্য কারো বসবাস, সেখানে যাওয়া আর বনবাসে যাওয়া একই কথা। বর্তমান প্রতিদিনের মতো আজও ঘুম না হওয়ায় ছাদে চলে এসেছি বিশাল আকাশের সাথে নিজের সবকিছু ভাগ করে নিতে। কানে ইয়ারফোন বুঝে বিশাল আকাশের দিকে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছি। ভাবছি চাওয়া না পাওয়া নিয়ে।
প্রায় দুই বছর পার হয়ে গেল তাকে নিয়ে। আজ মনে হচ্ছে নিজের অস্তিত্ব নিজের কাছে রাখা উচিত। অন্যের জন্য নিজের অস্তিত্বকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়। যদিও তাকে বাস্তব জীবনে সামনা সামনি দেখিনি, তবে তাকে কল্পনাই জীবিত করেছি। তার সাথে কল্পনায় বহুবার দেখা হয়েছে, বহুবার ছোয়া হয়েছে। তাই কল্পনায় তাকে নিয়ে আর আফসোস করিনা। তবে আজ থেকে কল্পনাতেই মৃত মানুষ হিসেবে কবর দিবো মনের গোরস্থানে। এসব ভেবেই নিচে রুমে চলে এলাম। তারপর তার সমস্ত স্মৃতি নিয়ে গুছিয়ে রাখলাম। ভেবেছিলাম তার সাথে যদি কখনো দেখা হয় একটি গোলাপ দিব।
যেদিন ভাবছিলাম সেদিন গোলাপটি নিয়ে এসে বইয়ের ভাজ থেকে বের করে নিলাম। সাথে তাকে নিয়ে লেখা চিঠিগুলো বের করে রাখলাম। অপেক্ষা করছি কখন সকাল হবে কারণ চিঠি গুলো নৌকা বানিয়ে ভাসিয়ে দিব ঠিকানাহীন পারে। সকাল হয়ে গিয়েছে। বেরিয়ে পড়লাম নাম না জানা নদীর তীর ধরে। নদীর তীরে এসেই ব্যাগ থেকে চিঠিগুলো দিয়ে বানানো নৌকাগুলো আর মৃত গোলাপ বের করলাম। ভাসিয়ে দিলাম কারণ নিজের প্রতিবিম্ব কে ঠকানো উচিত না। তাই আজ তাকে কল্পনায় মৃত মানুষ হিসেবে ভাসিয়ে দিলাম ঠিকানাহীন পারে। তার নামের অস্তিত্বকে নিজের মনে মৃত হিসেবে কবর দিলাম।