Mehmed Fatih Sultan Bangla | Episode – 15

সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মাদ ছিলেন সপ্তম উসমানীয় সুলতান, যিনি মুহাম্মাদ ফাতিহ অর্থাৎ বিজয়ী মুহাম্মাদ নামে পরিচিত। তিনি ১৪৪৪ সালের আগস্ট থেকে ১৪৪৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথমবারের মতো সুলতান ছিলেন এবং পরে ১৪৫১ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুনরায় সিংহাসনে বসেন। দ্বিতীয় দফায় তিনি ১৪৮১ সালের মে পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।

তিনি ও তার শায়খ আকশামসউদ্দিন কনস্টান্টিনোপলের নিকটে প্রথম কনস্টান্টিনোপল যুদ্ধের সময় সাহাবী আবু আইয়ুব আনসারির কবর খুঁজে পান এবং সেখানে মসজিদ নির্মাণ করেন। মুহাম্মাদ (সাঃ) এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী দ্বিতীয় মুহাম্মাদ ২১ বছর বয়সে কনস্টান্টিনোপল জয় করেন। তার অসাধারণ সামরিক দক্ষতা তৎকালীন সবচেয়ে বড় কামান ও স্থলপথে জাহাজ নিয়ে যাওয়ার কৌশল ছিল কনস্টান্টিনোপল যুদ্ধের অন্যতম কৃতিত্ব। এর ফলে পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। মুহাম্মদ আনাতোলিয়া, আলবেনিয়া, বসনিয়া, ক্রিমিয়া, ইতালি পর্যন্ত ইউরোপে অভিযান অব্যাহত রাখেন। আধুনিক তুরস্ক ও মুসলিম বিশ্বে সুলতান মুহাম্মদ একজন বীর হিসেবে সম্মানিত হন। তার স্মরণে ইস্তানবুলের ফাতিহ জেলা, ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ সেতু ও ফাতিহ মসজিদের নামকরণ করা হয়েছে।

শাহজাদা মুহাম্মদ ১৪৩২ সালের ৩০ মার্চ উসমানীয় রাজধানী এদির্নে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ ও মা হুমা হাতুন। ১১ বছর বয়সে তাকে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য প্রথা অনুযায়ী আমাসিয়া শাসনের জন্য প্রেরণ করা হয়। তার শিক্ষার জন্য সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ কয়েকজন শিক্ষক নিযুক্ত করেন। ইসলামী শিক্ষা তার মনে গভীর প্রভাব ফেলে। কনস্টান্টিনোপল জয়ের ক্ষেত্রে তরুণ বয়সে আকশামসউদ্দিন তার উপর প্রভাব ফেলেছিলেন।

১৪৪৪ সালের আগস্টে আনাতোলিয়ার কারামানিদের সাথে শান্তি স্থাপনের পর সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ সিংহাসন ত্যাগ করেন এবং দ্বিতীয় মুহাম্মাদ ১২ বছর বয়সে সুলতান হন। পোপের প্রতিনিধি কার্ডিনাল জুলিয়ান সিসারিনির উসকানিতে হাঙ্গেরির রাজা মুসলিমদের সাথে চুক্তি লঙ্ঘন করেন। জুলিয়ান বোঝান যে মুসলিমদের সাথে সম্পাদিত চুক্তি ভঙ্গ করলে তা বিশ্বাসঘাতকতা হবে না। হাঙ্গেরির জানোস হুনয়াডির নেতৃত্বে পরিচালিত ক্রুসেডকে মুহাম্মাদ প্রতিহত করতে সক্ষম হন। এসময় মুহাম্মাদ তার পিতা মুরাদকে পুনরায় সিংহাসনে বসার অনুরোধ করেন কিন্তু মুরাদ তাতে অস্বীকৃতি জানান। মুহাম্মাদ ক্রুদ্ধ হয়ে পিতার কাছে চিঠিতে লেখেন, “যদি আপনি সুলতান হন, তবে এগিয়ে এসে সেনাদের নেতৃত্ব দিন। যদি আমি সুলতান হই তবে আমি নির্দেশ দিচ্ছি আপনি আমার সেনাদের নেতৃত্ব দিন।” এরপর মুরাদ দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৪৪৪ সালে ভার্নার যুদ্ধে জয়লাভ করেন।

মুরাদের পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণের ক্ষেত্রে উজিরে আজম হালিল পাশার ভূমিকা ছিল। মুহাম্মাদের শিক্ষক আকশামসউদ্দিনের সাথে হালিল পাশার বিরূপ সম্পর্ক থাকায় তিনি মুহাম্মাদের শাসনের পক্ষে ছিলেন না।

১৪৫১ সালে পুনরায় সিংহাসনে বসার পর সুলতান মুহাম্মাদ নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করতে শুরু করেন এবং কনস্টান্টিনোপল আক্রমণের প্রস্তুতি নেন। বসফরাসের পূর্বে এশীয় অংশে তার প্রপিতামহ প্রথম বায়েজীদ আনাদোলুহিসারি দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। মুহাম্মাদ ইউরোপীয় অংশে রুমেলিহিসারি দুর্গ নির্মাণ করেন ফলে প্রনালীর উপর উসমানীয়দের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ স্থাপিত হয়। এরপর প্রণালী অতিক্রমকারী জাহাজের উপর করারোপ করা হয়। ভেনিসিয়ান একটি জাহাজ নির্দেশ অমান্য করায় সেটিকে কামানের গোলার আঘাতে ডুবিয়ে দেয়া হয় এবং নাবিকদের শিরশ্ছেদ করা হয়।

কনস্টান্টিনোপলে প্রথম অবরোধের সময় শহরের নিকটে দাফন করা সাহাবী আবু আইয়ুব আনসারির কবর আকশামসউদ্দিন আধ্যাত্মিক শক্তিবলে খুঁজে পান। বিজয়ের পর মুহাম্মদ এখানে আইয়ুব সুলতান মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৪৫৩ সালে মুহাম্মদ কনস্টান্টিনোপল অবরোধ করেন। এসময় তার বাহিনীতে সেনা সংখ্যা ছিল ৮০,০০০ থেকে ২,০০,০০০ এবং জাহাজ ছিল ৩২০টি। এপ্রিলের শুরুর দিকে শহর অবরোধ করা হয়। অবরোধের সময় উসমানীয়রা উরবানের নির্মিত প্রকাণ্ড কামান থেকে গোলাবর্ষণ করে। গোল্ডেন হর্নের প্রবেশপথে বিশালাকার শেকল স্থাপনের ফলে সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে তুর্কিরা বাধার সম্মুখীন হয়। মুহাম্মাদ তার জাহাজগুলোকে মাটির উপর দিয়ে টেনে গোল্ডেন হর্নে নিয়ে আসেন। ২৯ মে শহরের পতন হয় এবং রাসূলের কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের ভবিষ্যদ্বাণী রূপ লাভ করে। বিজয়ের পর মুহাম্মদ এদির্ন থেকে রাজধানী সরিয়ে কনস্টান্টিনোপলে নিয়ে আসেন।

Video Server- 01 | Full HD

Mehmed Fatih Sultan Bangla | Episode – 15
play-sharp-fill

Mehmed Fatih Sultan Bangla | Episode – 15

মেহমেদ ফাতিহ সুলতান সিরিজ বাংলা সাবটাইটেল | অনুবাদঃ সুমন ইসলাম

পরিচালকঃ সাফাক বল
চিত্রনাট্যকারঃ ওজান বোদুর
অভিনয়েঃ সেরকান চায়োগলু, সেলিম বায়রাক্টার, ফিক্রেট কুসকান, সেকিন ওজদেমির, তুবা উন্সাল, সিনান আলবায়রাক, এসিলা উমুত, আলি নুরি তুরকোগলু, কেনান কোবান, বুলেন্ট আলকিস, এরতুগারুল পোস্টোগলু, আয়মালিনাগিন, বেইমাইন, বেমিন, কেমিন সিনান ডেমির, ভলকান কেসকিন, কান ইয়ালকিন, সোনের টারকার, রেসেপ চাভদার, তোলগা আক্কায়া, গুভেন সেলেকম্যান, ফেরহান তুলমেন, মেরিচ ওজকায়া, ইসেম একার, দুয়গু বারবেরোগলু এবং তেওমান কুমারাকবাশি, আচেলিয়া আকয়ুন

সিরিজ ভিডিওঃ ইউটিউব থেকে সংগৃহিত
অনুবাদ ও সাবটাইটেল পরিচালনায়ঃ সুমন ইসলাম
এপিসোডটি বাংলা সাবটাইটেলে দেখতে প্রথমে ভিডিওটি Play করুন এরপর ভিডিও প্লেয়ারের ডানদিক থেকে CC  ক্লিক করে ভাষা নির্বাচন করুন।

৩৩০ সাল থেকে কনস্টান্টিনোপল ছিল রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী এবং শহরের অধিকারী সাম্রাজ্যের শাসক হতেন। কনস্টান্টিনোপল জয়ের পর, মুহাম্মদ রোমান সম্রাটদের মতো কাইসার-ই রুম বা সিজার উপাধি গ্রহণ করেন। সমসাময়িক পণ্ডিত জর্জ অব ট্রেবিজন্ড এই বিষয়ে সুলতানকে সমর্থন করেছিলেন। ইস্টার্ন অর্থোডক্স চার্চ এই ঘোষণা মেনে নিলেও ক্যাথলিক চার্চ এবং পশ্চিম ইউরোপ তা মেনে নেয়নি। সুলতান কনস্টান্টিনোপলের পেট্রিয়ার্ক হিসেবে গেন্নাডিয়াস স্কলারিয়াসকে মনোনীত করেন।

বাইজেন্টাইন সম্রাট একাদশ কনস্টান্টাইন কোনো উত্তরসূরি না রেখে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত বড় ভাইয়ের পুত্ররা উত্তরাধিকারী হওয়ার কথা ছিল, তবে সুলতান মুহাম্মদ তাদের প্রাসাদের দায়িত্বে নিযুক্ত করেন। জ্যেষ্ঠ পুত্র হাস মুরাদ মুহাম্মদের পছন্দের ছিলেন এবং তাকে বলকান বেলার্বে নিযুক্ত করা হয়েছিল। কনিষ্ঠ পুত্র মেসিহ পাশা একজন নৌ সেনাপতি হন এবং গেলিপলির সানজাক বেয়ের দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে তিনি সাম্রাজ্যের উজিরে আজম হিসেবে নিযুক্ত হন।

কনস্টান্টিনোপল জয়ের পর মুহাম্মদ শহরে অনেক মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করেন, যার মধ্যে ফাতিহ মসজিদ অন্যতম। সুলতান সুলাইমানের পূর্বে তিনিই প্রথম ফৌজদারি ও শাসনতান্ত্রিক আইন লিপিবদ্ধ করেন বলে স্বীকৃত। তার শাসনামলে উসমানীয় সাম্রাজ্য কনস্টান্টিনোপল, এশিয়া মাইনর, সার্বিয়া, আলবেনিয়া, ইতালি, ক্রিমিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। বসফরাসের উপর তার নামে নির্মিত হয়েছে ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ সেতু। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তুর্কি ১০০ লিরার নোটে তার নাম ও ছবি ছিল।

১৪৮১ সালে নতুন অভিযানকালে ইস্তানবুলের মালতেপেতে পৌঁছানোর পর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ৩ মে, ৪৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ইস্তানবুলের ফাতিহ মসজিদ সংলগ্ন স্থানে দাফন করা হয়। ধারণা করা হয়, তাকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল। একটি সূত্র অনুযায়ী, ইহুদি থেকে ইসলামে ধর্মান্তরিত ইয়াকুব পাশা এই বিষয়ে জড়িত ছিলেন। আরেকটি সূত্রমতে, তার পার্সিয়ান চিকিৎসক তাকে বিষপ্রয়োগ করেছিলেন।

SHARE IT

LIVE SERIES

Home
Magazine
Live
Episode
Music
Search
Scroll to Top